Friday, September 9, 2011

আমাদের দেশের বিতর্কিত মন্ত্রী এবং উপদেষ্টামন্ডলীরা কেমন আছেন?

সরকারের আড়াই বছরের মাথায় অন্তত দশ মন্ত্রী-উপদেষ্টা বিতর্কিত হয়ে পড়েছেন। দুর্নীতি, ব্যর্থতা, অপকর্ম, অতিমাত্রায় দলবাজি আর লাগামহীন কথাবার্তা এসব মন্ত্রী-উপদেষ্টাকে বিতর্কিত করেছে। বিতর্কিত মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের মধ্যে রয়েছেন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং সংস্থাপন ও প্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম।

এরই মধ্যে সরকারের এই ব্যর্থ মন্ত্রীদের পদত্যাগের দাবি উঠেছে নাগরিক সমাজ এমনকি সরকারি দলের পক্ষ থেকেও। মহাজোট সরকারের শরিক দলগুলোও একই দাবি করে চলেছে। সংসদে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা চার মন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়েছেন। ব্যর্থ মন্ত্রীদের অপসারণ দাবিতে পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবীদের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ এবার ঈদের নামাজ পড়েছেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি ছিল নজিরবিহীন ঘটনা। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যর্থ মন্ত্রীদের পক্ষ নিয়ে সম্প্রতি জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের এক ইফতার মাহফিলে বলেছেন, কোনো মন্ত্রীকে তিনি অপসারণ করবেন না। সরকারি দলের সংসদ সদস্যদেরও সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, ব্যর্থতার কথা বলে বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেবেন না।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতা গতকাল আমার দেশকে জানান, মন্ত্রীদের ব্যর্থতায় দলের নেতারাও বিব্রত। যোগাযোগমন্ত্রী ও নৌপরিবহনমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীদের ব্যর্থতা এবং বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের দায়ভার নিতে রাজি নন ক্ষমতাসীন মহাজোটের শরিক দলগুলো। মহাজোটের শরিকদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে এই মন্ত্রীদের নিয়ে মহাজোট আরও বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে পারে। বিশেষ করে, যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের ব্যর্থতা নিয়ে মহাজোটে ব্যাপক আলোচনা আছে। তাদের কর্মকাণ্ড, বক্তব্য ও দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতায় শরিক দলগুলো প্রকাশ্যেই সমালোচনা করছে। এসব মন্ত্রীর পদত্যাগ চায় দলগুলো। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যেও আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। তাদের বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে দলে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। বিশেষ করে, মন্ত্রীদের পরস্পরের প্রতি দায় চাপানোর প্রবণতায় নেতারা বিব্রত। সরকারের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কথাও বলছেন তারা।সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি আলোচিত দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা। দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলো যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বেড়ে গেছে সড়ক দুর্ঘটনা। যানজট এমন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যে, ছয় ঘণ্টার পথ যেতে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে। এটি এখন জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকেও যোগাযোগমন্ত্রীর ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সর্বশেষ জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্যদের তোপের মুখে পড়েন যোগাযোগমন্ত্রী। এছাড়া যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। পদ্মা সেতুর টেন্ডার প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির বিষয়ে বিশ্বব্যাংক তদন্ত করছে। ইতোমধ্যে কানাডা পুলিশ সে দেশের একটি প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। মন্ত্রীকে কমিশন দেয়া ছাড়া যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে কোনো কাজ পাওয়া যায় না বলেও অভিযোগ রয়েছে। বার বার প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
দায়িত্বভার নেয়ার পর আড়াই বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বাগাড়ম্বর ছাড়া কর্তব্যকাজে সফলতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। এ সময় দায়িত্বের প্রতি চরম অবহেলা ও দুর্নীতিবাজদের ঘনিষ্ঠভাবে লালনই করেছেন তিনি। নিজ মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতার কারণে জাতি মহাদুর্যোগে নিপতিত হলে কখনও অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে কিংবা
অর্থসঙ্কটের কথা বলে পার পেয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। সাম্প্রতিক কয়েকটি আলোচিত দুর্ঘটনা এবং সারাদেশে সড়ক-মহাসড়কের বেহাল দশা নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কিছু বক্তব্য যোগাযোগমন্ত্রীর স্বরূপ উন্মোচন করে দিয়েছে। সমালোচনার ঝড় উঠেছে রাজনৈতিক মহল ও নাগরিক সমাজে। এ অবস্থায় সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের কয়েকজন প্রকৌশলীকে বদলি করে নিজের ব্যর্থতা ও অদক্ষতা আড়াল করার চেষ্টা করেছেন তিনি। গত আড়াই বছরে উল্লেখ করার মতো রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত কাজ না হওয়ায় সারাদেশের ১৮ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ জাতীয় মহাসড়ক, আঞ্চলিক মহাসড়ক ও জেলা পর্যায়ের সড়কের ৭০ ভাগই ভেঙেচুরে একাকার হয়ে আছে। প্রায় এক বছর ধরে সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্য ও পরিবহন ব্যবসায়ী এমনকি সড়ক ও জনপথ বিভাগ এসব সড়ক মেরামতে যোগাযোগমন্ত্রীর কাছে বার বার ধরনা দিলেও কোনো ফল হয়নি। জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে সড়কপথ মেরামতের জন্য ৬৯০ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ১ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। এখান থেকে মেরামত বাবদ কোনো অর্থ ব্যয় করা হয়নি। অন্যদিকে গত অর্থবছরে মেরামত বাবদ বরাদ্দ দেয়া হয় ৬৬০ কোটি টাকা। এছাড়া এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) একটি সড়ক মেরামত ও নির্মাণবিষয়ক প্রকল্পের অধীনে রয়েছে আরও ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। অভিযোগ রয়েছে, গত বছরের বরাদ্দের টাকা অর্থবছরের শেষ সময়ে এসে তড়িঘড়ি ব্যয় করা হয়। মন্ত্রী ও সওজের প্রধান প্রকৌশলী (সদ্য বিদায়ী) মো. সাহাবুদ্দিনের পছন্দের কিছু ঠিকাদারের মাধ্যমে এ অর্থ ব্যয় করা হয়। আরও অভিযোগ রয়েছে, সওজের বড় বড় প্রকল্পের প্রতিটি কাজ থেকে শুধু প্রভাবশালীদের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় থেকে ১৫ শতাংশ করে কমিশন আদায় করা হয়। ফলে কোনো কাজই মানসম্মত হয় না। এ কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক মেরামতে বিশ্বব্যাংক প্রতিশ্রুতি দিয়েও শেষ পর্যন্ত অর্থছাড় করেনি। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, যোগাযোগমন্ত্রীর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চীনের বিভিন্ন কোম্পানির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এসব কোম্পানির সঙ্গে মন্ত্রীর কোম্পানির লেনদেন হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চীনের বহু কোম্পানি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ পেয়েছে। এমনই একটি কোম্পানির নাম ব্যবহার করে সম্প্রতি মন্ত্রীর পছন্দের বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মেরামত কাজ বাগিয়ে নেয়। জানা গেছে, গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ৮৭ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করার জন্য এ সংক্রান্ত প্রকল্পটিকে চারটি প্যাকেজে বিভক্ত করে গত ফেব্রুয়ারি মাসে সওজ চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে। এর মধ্যে একটি অংশ হলো, গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে মাওনা পর্যন্ত ৩০.২৫ কিলোমিটার সড়ক। টেন্ডারের মাধ্যমে এই অংশের কাজ পায় চীনের হেবাই রোড অ্যান্ড ব্রিজ গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড এবং বাংলাদেশের ইন্ট্রাকো বিডি। এরপর ঘটা করে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে হেবাই কোম্পানির কোনো প্রতিনিধি না থাকলেও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, যোগাযোগ সচিব মোজাম্মেল হক খান এবং সওজের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাহাবুদ্দিনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে হেবাই কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক মেরামত সংক্রান্ত কোনো টেন্ডারে তারা অংশগ্রহণ করেনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিষয়টি তদন্ত করে। তদন্তে বেরিয়ে আসে, ইন্ট্রাকোর কর্মকর্তারা চীনা হেবাই কোম্পানির কাগজপত্র জাল করে টেন্ডার ডকুমেন্টের সঙ্গে জমা দিয়েছিল। তদন্তে জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ইন্ট্রাকোর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে তাদের জমা দেয়া ব্যাংক গ্যারান্টির টাকা কেটে রাখা এবং ইন্ট্রাকোকে কালো তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়। শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গেছে, তদন্ত কমিটির এ সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রভাবশালীদের তেমন আগ্রহ নেই। সূত্র জানিয়েছে, যোগাযোগমন্ত্রীসহ দায়িত্বশীল অন্যদের আস্কারা পাওয়া একটি দুষ্ট চক্র বিদেশি কোম্পানির নাম ব্যবহার করে অন্যায়ভাবে কাজ বাগিয়ে নেয়ার মতো দুঃসাহস দেখাতে পেরেছে। ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এ অংশটিতে কোনো কাজ হয়নি। বর্তমানে এ অংশটির অবস্থাই সবচেয়ে বেশি খারাপ এবং মন্ত্রীর গাড়িও সেখানেই গর্তে পড়ে আটকে গিয়েছিল।
সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে পরামর্শের জন্য যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল এবং সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ সেল। গত আড়াই বছরে এ দুটি প্রতিষ্ঠানকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলে সরকারি কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং পরিবহন সেক্টরের মালিক ও শ্রমিক নেতারা সদস্য হিসেবে রয়েছেন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন মাস পরপর কাউন্সিলের সভা হওয়ার কথা। কিন্তু যোগাযোগমন্ত্রী ভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় গত আড়াই বছরে সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভা হয়েছে মাত্র তিনটি। সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে কাউন্সিলের কোনো সুপারিশ কখনও কাজে লাগানো হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। বিআরটিএ’র সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ সেল থাকলেও পুলিশের কাছ থেকে নেয়া তথ্য প্রকাশ ও কয়েকটি সেমিনারের আয়োজন ছাড়া আর কিছু হয় না। জানা গেছে, গত আড়াই বছরে যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল সম্পর্কে খুব বেশি আগ্রহ দেখাননি। মূলত তার অনাগ্রহের কারণেই এ কাউন্সিল সড়ক দুর্ঘটনা রোধে উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। কাউন্সিলের সদস্য নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের অবাস্তব পদক্ষেপে আপত্তি জানান বলে তাদের সভায় ডাকা হয় না। এই অবজ্ঞার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) কিছু সুপারিশও অগ্রাহ্য থেকে যায়। গত বছর জুন মাসে এআরআইর পক্ষ থেকে সারাদেশের সড়ক-মহাসড়কের ২১৬টি স্থানকে অতিদুর্ঘটনাপ্রবণ বা ব্ল্যাক স্পট হিসেবে চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে সওজ এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু এ ব্যাপারেও সংশ্লিষ্টরা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
আগামী মাসে পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরু হচ্ছে এমন গল্প গত তিন বছরে অসংখ্যবার শুনিয়েছেন আবুল হোসেন। কিন্তু নির্মাণের বাস্তব কাজ এখনও শুরু করতে পারেননি। বরং সেতুর কাজ শুরু না হতেই বার বার বিঘ্নিত হচ্ছে। টেন্ডার আহ্বান প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও টেন্ডার ডকুমেন্ট সরবরাহ করতে পারছে না সেতু বিভাগ। অন্যদিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের টেন্ডার নিয়েও মন্ত্রীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে।
যোগাযোগমন্ত্রীর সততা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ঢাকায় সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি। গোপন তথ্য ফাঁস করে দিয়ে আলোচিত ওয়েবসাইট উইকিলিকসে প্রকাশিত এক বার্তায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের সততা নিয়ে ঢাকায় সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস মরিয়ার্টির পুরোপুরি আস্থা ছিল না। যোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে নৈশভোজে আলাপের বরাত দিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত তারবার্তা পাঠান ২০১০ সালে। তারবার্তায় মরিয়ার্টি বলেছেন, যোগাযোগমন্ত্রীকে ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তারবার্তায় তিনি বলেছেন, সরকারের অনেক শীর্ষ কর্মকর্তাই রাষ্ট্রদূতের কাছে স্বীকার করেছেন, যোগাযোগমন্ত্রীর কার্যপ্রণালি সমস্যার সৃষ্টি করছে। চীনের সঙ্গে মন্ত্রী গভীর যোগাযোগ রেখে চলেন বলেও তারবার্তায় উল্লেখ করেন জেমস এফ মরিয়ার্টি। মূলত দলিলটিতে যোগাযোগমন্ত্রীর কাজের ধারা এবং সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ধরা হয়েছে।
নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান পরীক্ষা ছাড়াই সাড়ে ২৭ হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার জন্য চাপপ্রয়োগ এবং গরু-ছাগল চিনতে পারে এমন চালকদের লাইসেন্স দেয়ার প্রস্তাব করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন। অদক্ষ চালকদের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়লেও নৌমন্ত্রী তার অবস্থানে অনড় রয়েছেন। শাজাহান খান মন্ত্রিত্বের চেয়ে পরিবহন শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় বেশি ব্যতিব্যস্ত বলে অভিযোগ উঠেছে। সড়ক দুর্ঘটনায় একের পর এক প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও শ্রমিকদের পক্ষে সাফাই গেয়েই চলেছেন তিনি। তার বিরোধিতার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালকের মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নতুন আইন করা যায়নি। তার সুপারিশেই দেয়া হচ্ছে ২৭ হাজার ৩৮০ অদক্ষ চালককে ভারী যানবাহন চালানোর লাইসেন্স। তার এ কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠছেন সড়ক দুর্ঘটনায় স্বজন হারানোরাসহ দেশের সচেতন মানুষ। তার চাপেই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানিতে হত্যা মামলা দায়ের করা যাবে না—এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 
সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় দাবি উঠেছে দায়ী চালকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরে আইন প্রণয়নের। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া প্রণয়ন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। নতুন এ আইন প্রণয়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। শ্রমিকদের পক্ষ নিয়ে তিনি আইনে ৩০২ ধারা সংযোজনের বিরোধিতা করছেন। তার চাপেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালকদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের ৩০২ ধারায় মামলা নেয়া স্থগিত করে। তিনি যুক্তি দেখাচ্ছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত এবং হত্যা এককথা নয়। সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে ৩০৪-এর (খ) ধারায় মামলা হবে। এ ধারায় শাস্তি মাত্র তিন বছরের জেল। আর পরিকল্পিতভাবে কাউকে হত্যা করা হলে ৩০২ ধারায় মামলা হবে। শ্রমিকদের পক্ষ নিয়ে তিনি বলেন, ‘একজন চালক কখনোই চায় না যে তার গাড়ির নিচে পড়ে কেউ মারা যাক। দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই! দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে দেখা দরকার। দুর্ঘটনাকে হত্যা হিসেবে দেখার কোনো সুযোগ নেই।’ শ্রমিকদের পক্ষ নিয়ে তিনি আরও বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য চালকরা দায়ী নন।
গত ২ জুন ও ১২ জুলাই দুই দফায় নৌপরিবহনমন্ত্রী ২৭ হাজার ৩৮০ অদক্ষ চালককে ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার সুপারিশ করে বিআরটিএ’র কাছে। একথা পত্রপত্রিকায় প্রকাশ হলে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়। প্রশ্ন ওঠে, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকার যেখানে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, সেখানে একজন মন্ত্রী হয়ে শাজাহান খান পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই অদক্ষ চালককে লাইসেন্স দেয়ার সুপারিশ করেন কীভাবে?
এদিকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কাজে অযাচিত হস্তক্ষেপ ও অদক্ষ চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে চাপ দেয়ার অভিযোগে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। বৈঠকে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) দেড় লাখেরও বেশি ভুয়া লাইসেন্স দেয়ার অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্তও নেয়া হয়।
বৈঠকে গরু-ছাগল চিনতে পারে এমন চালকদের লাইসেন্স দেয়ার ব্যাপারে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের প্রস্তাবের কঠোর সমালোচনা করা হয়। লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বলে কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করেন।
বৈঠকে ভুয়া লাইসেন্স কেন, কীভাবে দেয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখে একটি প্রতিবেদন কমিটিতে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে নৌপরিবহনমন্ত্রী যেন আপত্তিকর মন্তব্য না করেন, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শও দেয়া হয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শাজাহান খান আর মন্ত্রী হিসেবে কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। তাকে বৈঠকে আমন্ত্রণও জানানো হবে না। তবে পরিবহন শ্রমিক নেতা হিসেবে তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন।
নৌমন্ত্রী বিভিন্ন সময় বেফাঁস কথাবার্তা বলেও সমালোচিত হয়েছেন। গত ১০ এপ্রিল সড়ক ভবনে মুজিবনগর সরকার গঠন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যদি স্বাধীনতার ঘোষক হতে পারেন তবে আমিও স্বাধীনতার ঘোষক।
৩০ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবে আওয়ামী ওলামা লীগ আয়োজিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে আয়োজিত আলোচনায় শাজাহান খান বিরোধীদলীয় নেত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, সংবিধান ছুড়ে ফেলে দেয়ার মতো বক্তব্য দেয়ার জন্য তাদের দেশ থেকে উচ্ছেদ করা উচিত।
বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান বাজার নিয়ন্ত্রণে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। নিজের ও পারিবারিক ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকায় তিনি জনগণের দিকে নজর দিতে পারছেন বলে ধারণা অনেকের। ফলে দ্রব্যমূল্য দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাজার-ব্যবস্থাপনায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্বলতা ও তদারকির অভাব, অসাধু ব্যবসায়ীদের তত্পরতা, বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করতে না পারা এবং সরকারের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণ বলে মনে করে মহাজোট ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়। পাশাপাশি পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি এবং টিসিবিকে শক্তিশালী করতে না পারায় বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় বাণিজ্যমন্ত্রী জনগণকে কম খাওয়ার পরামর্শ দেয়ায় সব মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
অস্বাভাবিক বাজার পরিস্থিতির কারণে বেশ কষ্টে আছেন সাধারণ মানুষ। গরিবের জন্য চালু করা ওএমএসের চালের লাইনে গিয়ে দাঁড়াচ্ছেন মধ্যবিত্তরাও। দু’বেলা পেটপুরে খেতে পারছেন না অনেকে। অভাবে রক্ত ও কিডনি বিক্রির ঘটনা বেড়ে গেছে। খাদ্যে রেকর্ড মূল্যস্ফীতি, সিন্ডিকেটের দোর্দণ্ড দাপটে বাজারে চরম অস্থিরতা তৈরি হলেও তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পান না বাণিজ্যমন্ত্রী। অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ না করে উল্টো জনগণকে তিনি কম খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দেয়ার লুকোচুরি, অকার্যকর টিসিবি, বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা নিয়ে সাধারণ উদ্যোক্তা ও বাণিজ্য-বিশ্লেষক কেউই খুশি হতে পারছেন না। অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের এ অবস্থার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও বাংলাদেশের জন্য কোনো সুখবর নেই মহাজোটের আমলে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সংক্রান্ত আলোচনা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। ভারতের বাজারে পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের ব্যাপারে তত্পরতা চললেও কোনো আশার বাণী শোনাতে পারেননি তিনি। আমদানি নীতির পরিবর্তন, সমন্বয়হীন মন্ত্রণালয়, রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজার অস্থির করে তোলা, গার্মেন্টজুট রফতানি বন্ধ না করায় ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তবে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খানের পারিবারিক আধিপত্যের কোম্পানিগুলো বেশ ভালোই চলছে। পুঁজিবাজারেও রয়েছে এসব কোম্পানির দাপুটে অংশগ্রহণ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পণ্যের দাম বেঁধে দেয়ার লুকোচুরি খেলায় এখন জনজীবন অতিষ্ঠ। বর্তমান সরকার বিভিন্ন সময়ে কমপক্ষে দশবার বিভিন্ন পণ্যের মূল্য বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু কোনোবারই তা কার্যকর হয়নি।
রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক সংস্থা টিসিবি পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারেনি। সিন্ডিকেট বলয়ে থাকার কারণে চুক্তি করেও পণ্য আনতে পারে না সংস্থাটি। এর সঙ্গে নিম্নমানের পণ্য সরবরাহের অভিযোগে এখন অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
জাপানি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানির বয়সসীমা পাঁচ বছরের পরিবর্তে তিন বছর করার উদ্যোগ নেয়ায় রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজার হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা করছেন পুরনো গাড়ি আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের সংগঠন বারভিডা। বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায় তিন বছরেও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারেনি সরকার। সম্ভব হয়নি খুচরা ও পাইকারি বাজারের আকাশ-পাতাল মূল্য ব্যবধান কমিয়ে আনা ও বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি করা।
বাণিজ্যমন্ত্রীর পারিবারিক প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হচ্ছে বেশ দক্ষতার সঙ্গে। মন্ত্রীর পারিবারিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সামিট পাওয়ার, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড, ওশান কনটেইনার ও খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারমূল্যও ফেসভ্যালুর চেয়ে ১০ থেকে ১২ গুণ বেশি। এর মধ্যে ডাইরেক্ট লিস্টিং বন্ধ হওয়ার পরও দুটি প্রতিষ্ঠান ডাইরেক্ট লিস্টিংয়ের সুযোগ নেয়। এদিকে বিদেশে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের অর্থ পাঠানোর সুযোগ তৈরির নেপথ্যে বাণিজ্যমন্ত্রীর যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে বলে জানা গেছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিদেশে বিনিয়োগ করার লক্ষ্যে বর্তমান আর্থিক নীতিমালা সংশোধনের জন্য তাগিদ দেয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানো আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে দেশের অবস্থা দুর্বল করবে। অর্থ বিভাগও মনে করে, বিনিয়োগের জন্য বিদেশে অর্থ পাঠানো ঠিক হবে না।
গত ৪ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সেমিনারে দেশের মানুষকে কম খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, কম খান দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে। এক অনুষ্ঠানে তার পরামর্শের কঠোর সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। সাবেক সামরিক আমলা ফারুক খানের নতুন নামকরণ ‘কম খান’ করেন সুরঞ্জিত। এই কম খান অর্থাত্ ফারুক খান বাজার মনিটরিং, টিসিবিকে কার্যকর এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে ভূমিকা রাখতে না পারলেও আড়াই বছর ধরেই আলোচনায় রয়েছেন। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পর তার আলোচিত মন্তব্য ছিল—এ ঘটনায় জঙ্গিদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
এছাড়া দ্রব্যমূল্য নিয়ে একেক সময় একেক কথা বলে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছেন তিনি। দেশের মানুষের বদ্ধমূল ধারণা, বাণিজ্যমন্ত্রী কথা বললেই জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দেয়ার লুকোচুরি খেলা, ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার খরচ বৃদ্ধি পাওয়া, অকার্যকর টিসিবি প্রভৃতি কারণে সব মহলই তার ওপর ক্ষুব্ধ। এমনকি নিজ দল আওয়ামী লীগের নেতারাও তার সমালোচনায় মুখর। এ প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দায়িত্বশীল পদে থেকে কিছু ব্যক্তির কাণ্ডজ্ঞানহীন কথাবার্তায় সরকার বিব্রত। তিনি এসব ব্যক্তিকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে না পারলে তা (দায়িত্ব) ছেড়ে দেয়ার (পদত্যাগের) পরামর্শও দেন সাবেক এই মন্ত্রী।
দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম দ্রব্যমূল্য প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে না পারার কারণে দলীয় ফোরামে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খানের কঠোর সমালোচনা করে তার পদত্যাগ দাবি করেন।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও ক্ষমতাসীন মহাজোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা রাশেদ খান মেনন বাণিজ্যমন্ত্রীর অপসারণ দাবি করে বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী যখন বলেন ‘কম খান’ তখন তিনি তা করেন কিনা, আমাদের জানার প্রয়োজন ছিল।
সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, র্যাবের ক্রসফায়ারে নিরীহ জনগণ হত্যা, পদে পদে মানবাধিকার লঙ্ঘন, ভিন্নমতের লোকজনদের ধরে নিয়ে নির্যাতন, হরতালে রাস্তায় মোবাইল কোর্ট বসিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সাজা দেয়া, দলীয় বিবেচনায় দাগী আসামিদের শাস্তি মওকুফ, পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু, বিশেষ করে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী এমইউ আহমেদকে বাসা থেকে ধরে নেয়ার পর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু ও পুলিশের উপস্থিতিতে গণপিটুনিতে নিরীহ মানুষ হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতাকে দায়ী করা হচ্ছে। চাঁদাবাজি ও দখলবাজি নিয়ন্ত্রণেও পুলিশ সফলতা দেখাতে পারেনি। পুলিশের ওপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি কম থাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
সম্প্রতি পুলিশের উপস্থিতিতে রাজধানীতে ছয় ছাত্র হত্যা, নোয়াখালীর সেনবাগে কিশোর হত্যা, সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হত্যার ঘটনা সমাজে আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে। নোয়াখালীতে পুলিশ মিলন নামের এক তরুণকে গাড়ি থেকে নামিয়ে জনতার হাতে তুলে দেয়। গণপিটুনিতে সে নিহত হলে পুলিশ আবার গাড়িতে তুলে নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কাদেরকে অপরাধী বানাতে পুলিশ মিথ্যা গল্প সাজিয়েছে। র্যাবের গুলিতে লিমনের পঙ্গু হওয়ার ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।
শেয়ার কেলেঙ্কারির হোতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া এবং দেশের সাধারণ নাগরিকদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বক্তব্য দিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছেন। জনগণকে হেয় করে দেয়া তার বক্তব্য নিয়ে ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ জন্মেছে। অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে প্রায়ই ‘রাবিশ’, ‘বোগাস’, ‘ননসেন্স’ ইত্যাদি তুচ্ছার্থক শব্দপ্রয়োগ করে চলেছেন। তিনি ‘জুয়াড়ি’, ‘ফাটকাবাজ’ বলেও গাল দিয়েছেন শেয়ার ব্যবসায়ীদের। দ্রব্যমূল্য কমানোর জন্য কার্যকর উদ্যোগ না নিয়ে তিনি বাণিজ্যমন্ত্রীর মতো জনসাধারণকে একদিন বাজারে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
গত ৭ আগস্ট পুঁজিবাজারে ব্যাপক দরপতনের পর মতিঝিলে বিক্ষোভকারীদের ‘ফাটকাবাজ’ বলে আখ্যায়িত করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ডিএসইর দরপতনে বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় তিনি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিক্ষোভে কোনো বিনিয়োগকারী নেই। তারা ফাটকাবাজ। প্রকৃত বিনিয়োগকারীরা কখনও বিক্ষোভ করে না।’ এদিন ডিএসইতে সূচক পড়েছিল ১৩৯ পয়েন্ট। কমে যায় লেনদেন ও প্রায় সব শেয়ারের দাম। এরপর অর্থমন্ত্রী ও গভর্নরের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ হয় মতিঝিলে।
এর আগে ‘দেশের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি’ নিয়ে গত ৬ আগস্ট ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী। আলোচনার বিষয়বস্তু অর্থনীতি নিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একজন সিনিয়র ব্যবসায়ী নেতা শেয়ারবাজার পরিস্থিতি উত্থাপন করার পর অর্থমন্ত্রী প্রচণ্ড বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘শেয়ারবাজার নিয়ে আমি কোনো আলোচনা করতে চাই না। ওখানে কোনো বিনিয়োগকারী নেই। আছে কিছু জুয়াড়ি।’ গত ২৪ জুলাই জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বাজেট বাস্তবায়ন ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছিল অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ইআরএফ। ওই অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল— ‘ভারত থেকে ৮৫ শতাংশ পণ্য এবং সেবা ক্রয় করার শর্তে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণচুক্তির যৌক্তিকতা কী?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা রাবিশ প্রশ্ন। মোট দেশজ উত্পাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে গত ৫ জুলাই উত্তেজিত কণ্ঠে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ ব্যাপারে সিপিডির বক্তব্য রাবিশ, টোটালি রাবিশ। আমি খুবই দুঃখিত।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি গত পৌনে তিন বছরে কোনো কাজই দেখাতে পারেননি। ‘বাংলাদেশ পাকিস্তানের বাফার স্টেট’ ভারতীয়দের এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ করারও সাহস পাননি তিনি। বাংলাদেশের সাংবাদিকরা কড়া প্রতিবাদ জানানোর পরও তিনি ছিলেন নিশ্চুপ। কোনো দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে গিয়ে বিদেশি কোনো সাংবাদিক সে দেশকে ‘বাফার স্ট্রেট’ বলে কটাক্ষ করার পরও মন্ত্রী চুপ থাকার ঘটনা বিরল। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির উপস্থিতিতে এ ধরনের কটাক্ষ করার ঘটনা স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশের জন্য ছিল মর্যাদাহানিকর। অবশ্য পরে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রশ্নের গুরুত্ব বোঝেননি। আমরা যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছি কারও বাফার স্টেট হওয়ার জন্য নয়। এছাড়া দীপু মনি একের পর এক দেশ সফর করে বেড়ালেও কোনো ফল বয়ে আনতে পারেননি।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব রঞ্জন মাথাই গত সোমবার বিকালে দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করার পরই ভারত ও বাংলাদেশের মিডিয়ায় দু’দেশের মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হচ্ছে না বলে খবর প্রচার হয়। যদিও তার আগেরদিন রোববারই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে কেন্দ্রের সমঝোতায় নাখোশ হয়েছেন। বাংলাদেশে না আসার ঘোষণা দেয়ার পরই এ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও ভারতের সঙ্গে লেনদেনের অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান জোর দিয়েই বলেন, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হচ্ছে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রচারিত বিবিসির খবরেও ড. মসিউর রহমান বলেন, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার রাতে গণভবনে সিনিয়র মন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার ড. মনমোহন সিংহের উপস্থিতিতে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হবে। শুধু তা-ই নয়, তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের মিডিয়ার প্রচারকে অনেকটা চ্যালেঞ্জ করেই বলেছিলেন, আমি ভারতের মান্যবর পররাষ্ট্র সচিবের বক্তব্য শুনেছি, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি মনমোহনের সফরে হচ্ছে না—এমন কোনো কথা তিনি বলেননি। তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে বিরোধের কারণে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসছেন না বলে আগেরদিন প্রচারিত খবরেরও প্রতিবাদ করেন দীপু মনি। তিনি বলেন, মমতা আসছেন না কিছুদিন পর তার উপনির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে।
ভারতের সঙ্গে লেনদেনে সম্পৃক্ত বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ সরকার পরিচালনায় মুখ্য ভূমিকা পালনকারী দুই সুপার উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ও ড. মসিউর রহমানকে ডানে-বাঁয়ে বসিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির ব্যাপারে যে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন, তা যে হাওয়াই আশাবাদ ছিল—সোমবার তা প্রমাণ হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের বক্তব্যও যে হাওয়াই ছিল, তাও স্পষ্ট হয়েছে।
যদিও সরকারের ঘনিষ্ঠ অনেকে মন্তব্য করেছেন, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে দুই সুপার উপদেষ্টার ব্যর্থতা ও দুর্নামের ভাগীদার হয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শেষ মুহূর্তে করিত্কর্মা দেখাতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন তিনি।
সরকার নির্বাচিত হলেও অনির্বাচিত চার সুপার উপদেষ্টা সরকারের সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। মন্ত্রীর সমমর্যাদার এসব উপদেষ্টা মন্ত্রীদের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতাধর। এদের মধ্যে দু’জন এরই মধ্যে সুপার উপদেষ্টা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। বলা যায়, পুরো সরকারই চালাচ্ছেন এ দুই সুপার উপদেষ্টা। মন্ত্রীর সিদ্ধান্তই মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত, সরকারের সিদ্ধান্ত, এমনকি আইনও তাদের কাছে কিছু নয়। তাদের সিদ্ধান্ত আইনেরও ঊর্ধ্বে অনেক সময় স্থান পায়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী না জানলেও তারা সরকারের ভেতরের ও বাইরের সব খবরই রাখেন। সাংবাদিকদের কাছে অবলীলায় নতুন নতুন খবর জানান। দেশের মানচিত্র কী হবে, সীমানাবিরোধ কীভাবে নিষ্পত্তি হবে, ট্যারিফ কী হবে, কোন জাহাজের কাছ থেকে ট্যারিফ নেয়া যাবে, কোন প্রতিবেশী দেশের জাহাজ থেকে ট্যারিফ নেয়া যাবে না—সব সিদ্ধান্তই তারা দেন।
কাগজে-কলমে একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান ও ড. গওহর রিজভী অনির্বাচিত ব্যক্তি হলেও বাংলাদেশের আগামীদিনের ভাগ্য গড়ার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন। অতীতে দেশের অর্থনীতি, শেয়ারবাজার, পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে তারা বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। তবে সম্প্রতি ট্রানজিট, স্থলসীমান্ত বিরোধ, সমুদ্রসীমা বিরোধ, পানি নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি এবং এ নিয়ে ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তি সম্পাদনে এ দুই উপদেষ্টার ভূমিকা সবার নজর কেড়েছে।
এ দুই সুপার উপদেষ্টা যে বর্তমান সরকার চালাচ্ছেন, তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমেই সেটা তারা জানান দিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রিসভার সদস্য আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের কর্মকাণ্ড নিয়েও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের কওমি মাদরাসাগুলো জঙ্গি সৃষ্টির প্রজনন কেন্দ্র বলে বক্তব্য দিয়ে ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ মাদরাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নেন। তার এ বক্তব্য আলেম সমাজের মধ্যে দারুণ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। তেমনি নিজ দায়িত্বে পাঁচশ’ কপি খসড়া সংবিধান ছাপিয়ে তিনি নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেন। তাছাড়া যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে তার অস্বচ্ছ ভূমিকাও সমালোচিত।
সরকারি কর্মকর্তাদের চাকরি খাওয়া, ওএসডি, পদোন্নতি, বদলি, চাকরিচ্যুতি—এসব বিষয়ে কলকাঠি নাড়ছেন প্রধানমন্ত্রীর আরেক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম। গত পৌনে তিন বছরে কয়েকশ’ সরকারি কর্মকর্তাকে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
 সূত্র: আমার দেশ

No comments:

Post a Comment