ব্যাপক দক্ষতা তাকে মাত্র ৯ বছর বয়সে ‘মাইক্রোসফট সার্টিফায়েড প্রফেশনাল’ হিসাবে সনদ এনে দেয়।
মাইক্রোসফটের গ্রুরুত্বপূর্ণ এবং সম্মানজনক এ সনদপ্রাপ্তদের তালিকায় সবচেয়ে কম বয়সী হিসাবেও নাম ওঠে তাঁর। কনিষ্ঠ এ কম্পিউটার প্রডিজি কে দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস নিজে, আহ্বান জানান যুক্তরাষ্ট্রে।
এতক্ষণ ধরে যার গল্প করা হচ্ছে তাঁর নাম আরফা, পুরো নাম আরফা কমির রানধওয়া। পাকিস্থানের জন্ম নেয়া এ কম্পিউটার প্রডিজি মাইক্রোসফট সার্টিফাইড প্রফেশনালস সার্টিফিকেট পাওয়ার পর বিশ্বব্যাপী বেশ আলোচনায় আসে। মাইক্রোসফট অফিস ঘুরে আসার পর কম্পিউটার শিক্ষায় তার অগ্রগতিকে সম্মান জানায় পাকিস্থান সরকারও। ২০০৫ সালে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে পাকিস্তান সরকারের দেয়া ফাতিমা জিন্ন স্বর্নপদক পায় আরফা। পায় সালাম পাকিস্থান ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড এবং প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড অব পারফর্মেন্স এর মতো অ্যাওয়ার্ডও।
সম্ভাবনাময় এ কম্পিউটার ‘প্রডিজি’ যে জীবনে খুব বড় কিছু করবেন এমনটি ভেবেছিলেন সবাই। সে স্বপ্ন দেখতেন তার বাবা আমজাদ করিমও। তবে না, সে স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ঝরে পড়লো এ মেধাবী মুখ। ‘কার্ডিয়াক অ্যাটাক’ জীবন কেড়ে নিলো তার। সর্বশেষ ২০১১ সালে সে লাহোরের গ্রামার স্কুল প্যারাগনে এ লেভেলে পড়ছিলো।
অস্বুস্থ্য অবস্থায় কোনমতে জীবন চললেও তার ব্রেইন প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়ে গতবছরের ২২ ডিসেম্বর। তাকে ভর্তি করা হয় লাহোর মিলিটারি হাসপাতালে, জীবন মৃত্যুর সন্ধীক্ষনে যখন ধুকছে আরফা-র জীবন তখন খবর যায় বিল গেটসের কাছে। অস্থির হয়ে ওঠেন বিল, যোগাযোগ করেন আরফার বাবার সঙ্গে। তার চিকিৎসার সব খরচ বহণের ঘোষনা দেন তিনি। আরফা-র ডাক্তারদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে কথা বলিয়ে দেন এ রোগের বিষেশজ্ঞদের সঙ্গেও। এরপর উদ্যোগ নেয়া হয় আরফাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আরোও উন্নত চিকিৎসার।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর আগেই সবাইকে ছেড়ে যায় আরফা, পাড়ি জমায় না ফেরার দেশে। ১৪ জানুয়ারি রাত নয়টায় মারা যায় এ ক্ষুদে কম্পিউটার প্রডিজি। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই ঝরে গেলো তার সম্ভাবনায় জীবন। আরফার মৃত্যুতে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন তাঁর বাবা, শোকাহত হয়েছেন মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসও। আরফা-র চলে যাওয়ায় তার বাবার স্বপ্ন যেমন ভেঙ্গেছে, তেমনি ভেঙ্গেছে বিল গেটসের স্বপ্নও।
No comments:
Post a Comment